শেখ সাখাওয়াত হোসেন,পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি:
সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার দুটি লাইন মনে পড়ে, “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”। দারিদ্র, অবহেলা ও বঞ্চিত-শোষিত মানুষের কাছে বিংশ শতাব্দির এ যুগেও পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটির মতোই। তেমনই এক দরিদ্র অসহায় পরিবারের ২২ বছর বয়সের ছেলে মোকছেদুল হাসান।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার নন্দীগ্রামে তার বাড়ি। মা, বাবার একমাত্র সন্তান তিনি। অভাবী ঘরের সংসার। মা, বাবা বৃদ্ধ ও রোগাক্রান্ত। বড় হয়েছে বলেই তার সংসারের দায়িত্বের বোঝাও বড়। ছোটবেলা থেকেই সে গ্রামে-গঞ্জে, হাটে -বাজারে, মেলায়, পূজা-পার্বনে, পথে পথে ঘুরে ঘুরে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে সংসার চালায়। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চারা এই হাওয়াই মিঠায়ে আকৃষ্ট। ঘর সংসার চালাতে গিয়ে মোকছেদুল হাসান সব সময়ই গুরু দায়িত্ব বহন করে চলছে। এতটুকু যেন ক্লান্তি নেই, ফুরসত নেই তার মধ্যে। দ্রব্য মূল্যের বাজারে এটি বিক্রি করেই সে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার বৃদ্ধ মা বাবাকে ডাক্তার দেখায়, ঔষধও কিনে দেয় সে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ভাঙ্গুড়া বাজারে কথা হয় মোকছেদুল হাসানের সাথে। সে আক্ষেপ করে বলেন, “স্যার পাবনা সদর উপজেলায় গত চার থেকে পাঁচ বছর এ ব্যবসা করেছি। গত তিন চার মাস ধরে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার চৌবাড়ীয়া মাষ্টার পাড়া এলাকায় থেকে ব্যবসা করছি। প্রতিদিন সকালে বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছি। প্রতিদিন ১০০০-১২০০ টাকা বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।
মোকছেদুল হাসান আরও বলেন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এত কষ্ট ক্লান্তি করে বাঁচি তবুও কারো কাছে হাত পাতি না। সমাজের বিত্তবানরা আমাদের দিকে ফিরেও তাকায় না। তাই বলে জীবন যুদ্ধে বসে নাই। হাওয়াই মিঠাইতেই জীবন তাতেই চলে আমার সংসার।